https://singingfiles.com/show.php?l=0&u=2282206&id=58692
### কা’ব ইবনে মালিক (রাঃ) এর তওবার ঘটনা
এই ঘটনা ইসলামের প্রাথমিক যুগের, যখন নবী করিম (সা.) তাবুকের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য সকল সাহাবিদের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এটি ছিল অত্যন্ত কঠিন একটি যুদ্ধ। এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করার কোনো বৈধ কারণ না থাকলেও সাহাবী **কা’ব ইবনে মালিক (রাঃ)** বিনা কারণে অংশগ্রহণ করতে পারেননি।
#### ঘটনা ও কা’ব ইবনে মালিক (রাঃ) এর অনুভূতি:
যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করতে পারায় তিনি পরবর্তীতে ভীষণ অনুশোচনা অনুভব করেন এবং নিজের মধ্যে অপরাধবোধ পোষণ করতে থাকেন। নবী করিম (সা.) যুদ্ধে ফেরার পর তার কাছে উপস্থিত হন এবং সৎভাবে স্বীকার করেন যে, তার কোনো বৈধ কারণ ছিল না, বরং অলসতার কারণেই তিনি যুদ্ধ থেকে বিরত থেকেছিলেন। তার সৎ স্বীকারোক্তি ও তওবা দেখে নবী করিম (সা.) কা’ব ইবনে মালিক (রাঃ) এবং আরও দুইজন সাহাবীকে ৫০ দিন পর্যন্ত সামাজিকভাবে বয়কটের নির্দেশ দেন।
এই সময়টুকুতে তারা নিজেকে একা অনুভব করতেন এবং আল্লাহর কাছে গভীরভাবে তওবা করতেন। তাদের তওবা এতই খাঁটি ছিল যে, তারা দিন-রাত অনুশোচনা করতে থাকেন। সেই কঠিন ৫০ দিনের পরীক্ষার পর আল্লাহ কা’ব ইবনে মালিক (রাঃ) এবং অন্য দুই সাহাবির তওবা কবুল করেন এবং তাদের ওপর রহমতের ঘোষণা দেন।
#### কুরআনে এই ঘটনার উল্লেখ:
এই ঘটনার পর আল্লাহ তাআলা কুরআনের সূরা তওবার আয়াতে এই তওবার কথা ঘোষণা করেন:
> **"আর সেই তিনজনের (তা’ওবা) গ্রহণ করিলেন, যাহারা যুদ্ধ হইতে বিরত রহিয়াছিল, এমনকি যাহাতে ভূমণ্ডল সমস্ত প্রশস্ততা সত্ত্বেও তাহাদের উপর সংকুচিত হইয়া পড়িল এবং তাহাদের প্রাণ তাহাদের প্রতি বিরক্ত হইল এবং তাহারা বুঝিতে পারিল যে, আল্লাহর শরণ ব্যতীত আর কাহারো নিকট শরণ গ্রহণ করিবার স্থান নাই। পরে তিনি তাহাদের প্রতি কৃপা প্রকাশ করিলেন, যেন তাহারা মন ফিরাইয়া নেয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু।"**
> *(সূরা তওবা, আয়াত ১১৮)*
#### শিক্ষণীয় দিক:
১. **তওবা এবং আন্তরিক অনুশোচনা**: কা’ব ইবনে মালিক (রাঃ) এর ঘটনা আমাদের শেখায়, তওবা করতে হলে আন্তরিক হতে হয়। আল্লাহ শুধুমাত্র সেই তওবা কবুল করেন, যেটি খাঁটি ও সৎ।
২. **পরীক্ষা ও ধৈর্য**: এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, তওবা কবুল হওয়ার আগে আমাদের জীবনে অনেক পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। আল্লাহ তাদের তওবা কবুলের আগে ৫০ দিনের জন্য তাদের পরীক্ষা নেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের ক্ষমা করেন।
৩. **আল্লাহর করুণা**: আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য অত্যন্ত দয়ালু এবং ক্ষমাশীল। যখন আমরা আন্তরিকভাবে তওবা করি এবং আল্লাহর পথে ফিরে আসতে চাই, তিনি আমাদের জন্য ক্ষমার দরজা খোলা রাখেন।
---
এই ঘটনা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, আল্লাহর কাছে ফিরে আসার জন্য কখনোই দেরি করা উচিত নয়। যখনই আমরা ভুল করি, তখনই আমাদের আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত, কারণ আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য সর্বদা ক্ষমাশীল।
Post a Comment